বর্তমান সময়ে অনেকেই জানতে চান 2000 টাকায় কি ব্যবসা করা যায়? বড় মূলধন না থাকলেও ছোট পরিসরে ব্যবসা শুরু করে আয় করা একেবারেই সম্ভব। সঠিক পরিকল্পনা, পরিশ্রম ও ধৈর্য থাকলে অল্প টাকা দিয়েও ধীরে ধীরে একটি লাভজনক ব্যবসা দাঁড় করানো যায়।
এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করব ২০০০ টাকায় কী ধরনের ব্যবসা শুরু করা যায়, কীভাবে শুরু করবেন এবং কীভাবে লাভ বাড়াবেন। ২০০০-৫০০০ টাকায় কি কি ব্যবসা করা যায় নিম্নে বিস্তারিত জানুন।
২০০০ টাকায় ব্যবসা শুরু করা কি বাস্তবসম্মত?
হ্যাঁ, অবশ্যই বাস্তবসম্মত। বর্তমানে অনলাইন ও অফলাইন দুই মাধ্যমেই এমন অনেক ব্যবসা রয়েছে যেগুলোর জন্য বড় বিনিয়োগ দরকার হয় না।
বিশেষ করে ঘরে বসে বা মোবাইল ব্যবহার করে শুরু করা ব্যবসাগুলো ২০০০ টাকার মধ্যেই করা যায়। তবে ব্যবসা আপনাকে ছোট পরিসরে শুরু করতে হবে।
অবশ্যই পড়ুনঃ
এরপর ধীরে ধীরে আপনার ব্যবসাতে বিনিয়োগের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে হবে। বিনিয়োগ বৃদ্ধি করলে ব্যবসা ভালোভাবে করা যায়। যেমন ধরুন আপনি ২০০০ টাকা পুঁজি নিয়ে ব্যবসা শুরু করলেন,
এরপর আস্তে আস্তে পাঁচ হাজার টাকাতে পুঁজি বাড়াতে থাকেন। এভাবে ব্যবসাতে বিনিয়োগ এর পরিমাণ বৃদ্ধি করুন। এতে করে অবশ্যই ব্যবসাতে সফল হতে পারবেন।
২০০০ – ৫০০০ টাকায় লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া
আপনি দুই হাজার অথবা 5000 টাকা দিয়ে লাভজনক ব্যবসা করতে পারেন। আমরা এখন সর্বনিম্ন ২০০০ টাকার লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে আলোচনা করব।
আমরা এমন কিছু আইডিয়া জানাবো যেগুলো আপনি মাত্র দুই হাজার টাকা দিয়েই শুরু করতে পারবেন। নিম্নে আইডিয়াগুলো তুলে ধরা হলোঃ
১. অনলাইন পণ্য রিসেলিং ব্যবসা
আপনি ছোট পরিসরে অনলাইন পণ্য রিসেলিং এর ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এই ব্যবসাটি আপনি ২০০০ থেকে শুরু করে ৫০০০ টাকার মধ্যে শুরু করতে পারবেন।
ফেসবুক পেজ বা হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে কাপড়, কসমেটিকস, ঘড়ি বা গ্যাজেট বিক্রি করতে পারেন। কম দামে আকর্ষণীয় কিছু প্রোডাক্ট বা পণ্য কিনে এনে অনলাইন এর মাধ্যমে বিক্রয় শুরু করতে পারেন।
এক্ষেত্রে আপনার লাভের সম্ভাবনা কম থাকবে, আস্তে আস্তে পুঁজি বাড়ালে লাভের পরিমাণ বাড়তে থাকবে। এমন কিছু প্রোডাক্ট নিয়ে ব্যবসা শুরু করুন যেগুলোর মার্কেটে ডিমান্ড বেশি। তবে সর্বনিম্ন ৫০০০ টাকা নিয়ে ব্যবসাটি থেকে শুরু করুন।
২. ফ্রিল্যান্সিং কাজ শুরু
আপনার যদি লেখা, গ্রাফিক ডিজাইন, ভিডিও এডিটিং বা ডেটা এন্ট্রির দক্ষতা থাকে, তাহলে মাত্র ইন্টারনেট খরচেই কাজ শুরু করা সম্ভব। তবে এই কাজগুলো করার জন্য ল্যাপটপ বা কম্পিউটারের প্রয়োজন হয়।
যদি আপনার আগে থেকেই বাড়িতে ল্যাপটপ বা কম্পিউটার থাকে তাহলে সেটি ব্যবহার করে কম খরচে ইন্টারনেট সেবা নিয়ে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করুন।
ফ্রিল্যান্সিং এর সার্ভিস গুলো বিক্রি করে খুব সহজে ইনকাম করা সম্ভব। সামান্য কিছু টাকা খরচ করে ইন্টারনেট সংযোগ নিতে হয়। দুই থেকে তিন হাজার টাকা খরচ করেই ওয়াইফাই সংযোগ নেওয়া যায়।
এতে করে আপনার প্রাথমিক বিনিয়োগ হবে তিন হাজার টাকা। এরপর আপনি ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মে একাউন্ট খুলে প্রোফাইল সেটআপ করে ফ্রিল্যান্সিং সার্ভিস দেওয়া শুরু করুন।
- প্রাথমিক খরচ: ইন্টারনেট + প্রোফাইল সেটআপ
- লাভ: দক্ষতা অনুযায়ী বেশি
৩. ঘরে বসে খাবার ব্যবসা
হোমমেড কেক, পিঠা, স্ন্যাকস বা রান্না করা খাবার বিক্রি করতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনি কম পুজিতেই এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারবেন।
বর্তমানে হোমমেড কেকের চাহিদা প্রচুর রয়েছে, এক্ষেত্রে আপনি বাড়িতে কেক তৈরি করে সেগুলো অনলাইনে ডেলিভারি দিতে পারেন। এই ব্যবসাটি করে খুব সহজে সফল হওয়া যায়।
- প্রাথমিক পুঁজি: ৪০০০–৫০০০ টাকা
- চাহিদা: লোকাল এরিয়ায় বেশি
৪. মোবাইল রিচার্জ ও বিল পেমেন্ট সার্ভিস
বিকাশ, নগদ বা রকেট ব্যবহার করে মোবাইল রিচার্জ ও বিল পেমেন্টের সার্ভিস দিতে পারেন। এই ব্যবসাটি সর্বনিম্ন ২০০০ টাকা দিয়ে শুরু করা যাবে। তবে আপনাকে প্রথম দিকে নির্দিষ্ট স্থানে দোকান ভাড়া নিতে হবে। এরপর কিছু বিনিয়োগ করে মোবাইল রিচার্জ ও বিল পেমেন্ট সার্ভিস শুরু করতে হবে।
- প্রাথমিক পুঁজি: ২০০০–৫০০০ টাকা
- ঝুঁকি: খুবই কম
৫. ইউটিউব বা ফেসবুক কনটেন্ট তৈরি
নিজের দক্ষতা বা অভিজ্ঞতা নিয়ে ভিডিও বানিয়ে অনলাইনে শেয়ার করতে পারেন। বর্তমানে ইউটিউব ও ফেসবুকে ভিডিও কনটেন্ট বানিয়ে অনেকেই প্রচুর টাকা ইনকাম করছে।
আবার আপনি ইউটিউবে প্রোডাক্ট বিক্রি করে আয় করতে পারেন। ইউটিউব এবং ফেসবুকের সাহায্য নিয়ে প্রোডাক্ট এর প্রচার করতে পারেন, এভাবে স্পন্সর থেকেও আয় করা সম্ভব।
- প্রাথমিক খরচ: মোবাইল + ইন্টারনেট
- আয়: সময়ের সাথে বাড়ে
৬. ব্লগিং শুরু করা
নিজের অভিজ্ঞতা বা তথ্যভিত্তিক লেখা দিয়ে একটি ব্লগ চালু করতে পারেন। সামান্য ২ হাজার টাকা খরচেই ব্লগিং ওয়েবসাইট তৈরি করা যায় এবং সেখানে নিয়মিত লেখালেখি করে গুগল এডসেন্স সহ আরো বিভিন্ন মাধ্যমে ইনকাম করা যায়।
- খরচ: ডোমেইন ও হোস্টিং
- আয়: গুগল অ্যাডসেন্স ও অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
২০০০ টাকায় ব্যবসা করে কত টাকা আয় করা যায়?
আয়ের পরিমাণ নির্ভর করে
- আপনার পরিশ্রম
- ব্যবসার ধরন
- মার্কেটিং কৌশল
শুরুর দিকে মাসে ৫০০০–১০,০০০ টাকা আয় হলেও ধীরে ধীরে তা ২০,০০০ টাকা বা তার বেশি হতে পারে।
উপসংহার
সবশেষে বলা যায়,২০০০-৫০০০ টাকায় কি ব্যবসা করা যায়? এই প্রশ্নের উত্তর নিঃসন্দেহে হ্যাঁ। সঠিক আইডিয়া বেছে নিয়ে পরিশ্রম করলে অল্প পুঁজিতেই ব্যবসা শুরু করে সফল হওয়া সম্ভব। বড় ব্যবসার স্বপ্ন দেখতে হলে ছোট থেকেই শুরু করাই সবচেয়ে ভালো পথ।
আমি নোমান, একজন অনলাইন ইনকাম এক্সপার্ট ও কনটেন্ট ক্রিয়েটর। ২০২১ সাল থেকে অনলাইন আয়ের বিভিন্ন মাধ্যম নিয়ে গবেষণা করছি এবং সেই অভিজ্ঞতার আলোকে এই ওয়েবসাইটে নিয়মিত তথ্যবহুল অনলাইন ইনকামের বিষয় নিয়ে আর্টিকেল প্রকাশ করি। পাশাপাশি তথ্যবহুল দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি







খুবই ভালো ধরনের অ্যাপস
14