হোয়াটসঅ্যাপ থেকে টাকা ইনকাম করার ১০টি উপায়

বর্তমান সময়ে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করে প্রায় সকলেই বিভিন্নভাবে ইনকাম করে থাকে। আর সেই ইনকাম করার উপায় গুলোই আপনাদের মাঝে আজকে শেয়ার করব।

হোয়াটসঅ্যাপ থেকে টাকা ইনকাম করার উপায় গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়ে দেবো। হোয়াটসঅ্যাপ শুধু মাত্র এখন যোগাযোগের মাধ্যম নয় বরং হোয়াটসঅ্যাপ এখন ইনকামের অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে।

Whatsapp ব্যবহার করে কিভাবে টাকা ইনকাম করতে পারবেন এই সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব। অনেক উপায়ে whatsapp থেকে আয় করা যায়, যেগুলো আপনি ঘরে বসে করতে পারেন।এবার চলুন whatsapp থেকে ইনকাম করার উপায় বিস্তারিত জেনে আসি।

হোয়াটসঅ্যাপ থেকে টাকা ইনকাম

বর্তমান ডিজিটাল যুগে স্মার্টফোনের ব্যবহার যেমন বেড়েছে, তেমনি বাড়ছে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীর সংখ্যাও। শুধু যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবেই নয়, হোয়াটসঅ্যাপ এখন একটি ইনকাম সোর্সও হতে পারে,যদি সঠিকভাবে ব্যবহার করা যায়।

আরো পড়ুনঃ বাবুল গেম খেলে টাকা ইনকাম করার উপায়

আপনি যদি ঘরে বসে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করে টাকা ইনকাম করতে চান, তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। নিম্নে হোয়াটসঅ্যাপ থেকে ইনকাম করার ১০টি কার্যকরী উপায় আলোচনা করা হলোঃ

১. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয়

Whatsapp থেকে ইনকাম করার অন্যতম উপায় হলো অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। হ্যাঁ বন্ধুরা হোয়াটসঅ্যাপ এর সাহায্য নিয়ে আপনি প্রচুর এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারেন। আর আপনারা জানেন এফিলিয়েট মার্কেটিং করে অনেক বেশি ইনকাম করা যায়।

আপনার একটি whatsapp চ্যানেল থাকলে সেখানে অ্যাফিলিয়েট লিংক শেয়ার করে কমিশন ভিত্তিক ইনকাম করা শুরু করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল গুলোতে প্রচুর ফলোয়ার বা মেম্বার
থাকতে হবে।

আরো পড়ুনঃ পোস্ট করে টাকা আয় করুন

হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে ফলোয়ার সংখ্যা বাড়ানোর জন্য আকর্ষণীয় কনটেন্ট লিখতে পারেন। যদি আকর্ষণীয় কন্টেন্ট whatsapp চ্যানেলে প্রতিদিন প্রোভাইড করেন তাহলে অবশ্যই আপনার চ্যানেলের মেম্বার সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকবে।

আর এভাবে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল বা গ্রুপে প্রচুর মেম্বার হলে আপনি সহজেই অ্যাফিলিয়েট লিংক শেয়ার করে কমিশন ভিত্তিক ইনকাম করতে পারবেন। এফিলিয়েট মার্কেটিং মূলত হল প্রোডাক্ট বা পরিষেবার প্রচার করা।

আপনার অ্যাফিলিয়েট লিংকে ক্লিক করলেই আপনি কমশন ভিত্তিক ইনকাম করতে পারবেন।  বর্তমান সময় অনেক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে ইনকাম করার সুযোগ দেয় যেমনঃ  Amazon, Daraz, Clickbank, , Digistore24।

আপনি এ সকল ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের সাইটে এফিলিয়েট প্রোগ্রামে রেজিস্ট্রেশন করে তাদের অ্যাফিলিয়েট লিংক গুলো হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে শেয়ার করে কমিশন ভিত্তিক উপার্জন করতে পারবেন।

২. হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ মার্কেটিং

নিজস্ব একটি গ্রুপ তৈরি করে প্রোডাক্ট/সার্ভিসের প্রচার করে বিক্রি করতে পারেন। যেমনঃ কসমেটিক্স, গার্মেন্টস, অনলাইন কোর্স ইত্যাদি। অর্থাৎ এখানে আপনি whatsapp গ্রুপে নিজের ব্যবসার মার্কেটিং করতে পারবেন। যার ফলে আপনি অনলাইন বিক্রির পরিমাণ বাড়াতে পারবেন।

এতে করে আপনার অনলাইন ব্যবসাটির প্রচার হবে এবং আপনি বেশি অনলাইন প্রোডাক্ট বিক্রি করে ইনকাম করতে পারবেন। এর পাশাপাশি আপনারা চাইলে বিভিন্ন এড নেটওয়ার্ক নিয়ে ডাইরেক্ট লিংক মার্কেটিং করতে পারেন। এক্ষেত্রে প্রচুর ইনকাম করা যায়।

শুধুমাত্র অ্যাড নেটওয়ার্কগুলোর ডাইরেক্ট শেয়ার করে দিনে পাঁচ থেকে দশ ডলার আয় করতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে আপনার হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে প্রচুর মেম্বার এর প্রয়োজন হবে। হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মেম্বার গুলো যদি আপনার এড নেটওয়ার্ক লিংক গুলোতে ক্লিক করে তাহলে আপনার ইনকাম হবে।

অ্যাড নেটওয়ার্ক সাইটগুলোর ডাইরেক লিংকগুলোতে সাধারণত বিভিন্ন টাইপের এড দেখানো হয়। যার মাধ্যমে আপনি আয় করতে পারবেন। বর্তমানে Adsterra এড নেটওয়ার্ক ডাইরেক্ট link মার্কেটিং করার জন্য বেশি জনপ্রিয়। এখানে সরাসরি একাউন্ট খুলে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে মার্কেটিং করুন, অনলাইন থেকে ইনকাম করতে পারবেন।

৩. ডিজিটাল প্রোডাক্ট বিক্রি

হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল বা গ্রুপ ব্যবহার করে ইবুক, ডিজিটাল আর্ট, সফটওয়্যার, অথবা ডিজিটাল সেবা (যেমন: SEO সার্ভিস) বিক্রি করতে পারেন। এতে করে আপনি সহজেই অনলাইন থেকে আয় করতে পারবেন।

ঘরে বসেই আপনি এই সার্ভিস গুলো বিক্রি করে ইনকাম করতে পারছেন। আপনাকে আর ঘরের বাইরে গিয়ে মার্কেটিং করতে হচ্ছে না। তাই বলা যায় হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করে খুব সহজে মার্কেটিং করে ইনকাম করতে পারছেন।

৪. অনলাইন কোচিং বা টিউশনি অফার করুন

হোয়াটসঅ্যাপে শিক্ষার্থী খুঁজে নিজের কোচিং সেবা চালু করুন। ভিডিও কল অথবা অডিও টেক্সট মেসেজ এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পড়ানো সম্ভব। তবে আপনি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার বিষয়ে নোট প্রদান করতে পারেন।

তাছাড়াও whatsapp গ্রুপে ভিডিও কলের মাধ্যমে ক্লাস নেওয়া যায়, তাই এই উপায়ে আপনি নিজের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে হোয়াটসঅ্যাপে ছাত্রছাত্রীদের টিউশন দিয়ে আয় করতে পারবেন।

৫. কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে সেবা দিন

হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল বা গ্রুপ ব্যবহার করে কনটেন্ট রাইটিং, ভিডিও এডিটিং বা গ্রাফিক ডিজাইন সার্ভিস প্রোমোট করতে পারেন। পাশাপাশি হোয়াটসঅ্যাপে পরিচিতদের বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল সেবা দিতে পারেন। এতে করে সহজেই আয় করতে পারবেন।

যদি আপনার কোন অনলাইন সার্ভিস থাকে তাহলে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে প্রমোট করতে পারবেন। যদি আপনার নিজের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে মেম্বার না থাকে, সেক্ষেত্রে আপনি অন্য জনের চ্যানেলে আপনার সার্ভিসটি প্রমোট করতে পারেন।

এক্ষেত্রে কিছু টাকা খরচ হতে পারে। এভাবে কিন্তু নিজের সার্ভিস প্রমোশন করেও হোয়াটসঅ্যাপ থেকে টাকা ইনকাম করা সম্ভব।

৬. রেফারেল প্রোগ্রাম ব্যবহার করুন

অনেক অ্যাপ বা ওয়েবসাইট হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে রেফার করলেই কমিশন দেয়। যেমনঃ Binomo, Pi Network, বা কিছু গেম অ্যাপস। এর পাশাপাশি আরো অনেক প্ল্যাটফর্ম রয়েছে যেখানে রেফারেল প্রোগ্রাম রয়েছে। সেই প্ল্যাটফর্মগুলোতে আপনি সাইন আপ করে রেফার লিংক সংগ্রহ করবেন।

আর সেই রেফার লিংক whatsapp গ্রুপে শেয়ার করে ইনকাম করবেন।যদিও whatsapp চ্যানেল অথবা গ্রুপে প্রচুর মেম্বার থাকতে হয়। তবুও আপনি whatsapp বিভিন্ন গ্রুপে রেফারেল লিংক শেয়ার করে আয় করতে পারবেন।

৭. টিকিট বা ইভেন্ট মার্কেটিং

আপনার এলাকায় ইভেন্ট বা ট্যুরিজম টিকিট বিক্রির জন্য হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করে আয় করতে পারেন। এর জন্য সরাসরি একটি হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল বা গ্রুপ খুলুন। এবার চ্যানেল ও গ্রুপগুলোতে মেম্বার যোগ করুন।

বিশেষ করে যারা আপনার এলাকায় থাকে তাদেরকে গ্রুপে add করার চেষ্টা করুন। এখন আপনার চ্যানেলে প্রচুর মেম্বার হলে সেখানে টিকিট বিক্রি শুরু করতে পারেন। অর্থাৎ অনলাইনে টিকিট বিক্রি করতে পারবেন। যারা মূলত অনলাইনে টিকিট ক্রয় করে থাকে তাদেরকে অবশ্যই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে জয়েন করাবেন।

৮. রিসেলিং বিজনেস শুরু করুন

অন্যদের কাছ থেকে পণ্য সংগ্রহ করে হোয়াটসঅ্যাপে গ্রাহকদের কাছে বিক্রি করুন। এই উপায়ে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করে ইনকাম করা যায়। আপনি বিভিন্ন ধরনের পুরাতন ও নতুন প্রোডাক্ট ক্রয় করে অনলাইনে বিক্রয় করতে পারেন।

আর অনলাইনে বিক্রি করার মাধ্যমে হিসেবে whatsapp গ্রুপ বা চ্যানেল ব্যবহার করুন। এভাবে কিন্তু হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করে প্রচুর অর্থ হয় করা যায়।

৯. পেইড প্রোমোশন সার্ভিস

Whatsapp ব্যবহার করে এই উপায়ে ইনকাম করা অনেক কঠিন। কারণ এই উপায়ে ইনকাম করার জন্য আপনার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল বা গ্রুপে প্রায় লক্ষাধিক মেম্বার থাকতে হবে। যদি প্রচুর ফলোয়ার থাকে চ্যানেলে সেক্ষেত্রে আপনি এই উপায়ে আরনিং করতে পারবেন।

আপনার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে যদি প্রচুর ফলোয়ার থাকে সে ক্ষেত্রে আপনি পেইড প্রমোশন সার্ভিস দিতে পারেন। যারা তাদের ইউটিউব চ্যানেল, ফেসবুক পেজ বা অ্যাপ প্রোমোট করতে চায়, তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে whatsapp চ্যানেলে প্রমোশন করতে পারেন। এভাবে প্রচুর ইনকাম করা সম্ভব।

১০. Freelancing ক্লায়েন্ট খোঁজা

হোয়াটসঅ্যাপে বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং গ্রুপে জয়েন করে আপনি ফ্রিল্যান্সিং ক্লায়েন্ট খুজতে পারেন। এভাবে সহজেই ফ্রিল্যান্সিং ক্লায়েন্ট খুঁজে ফ্রিল্যান্সিং সার্ভিস গুলো দিয়ে ইনকাম করা যায়।

পাশাপাশি হোয়াটসঅ্যাপে নিজের পরিচিতদের মাধ্যমে ক্লায়েন্ট খুঁজে ফ্রিল্যান্সিং কাজ পেতে পারেন। বিভিন্ন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ বা চ্যানেলে আপনার Fiverr বা Upwork প্রোফাইল শেয়ার করুন। এতে করে কাজ পেতে সুবিধা হবে।

শেষ কথা

হোয়াটসঅ্যাপ কেবল যোগাযোগের মাধ্যম নয়, সঠিক পরিকল্পনা ও কৌশলে এটি আপনার ইনকামের উৎস হয়ে উঠতে পারে। উপরের উপায়গুলো অনুসরণ করে আপনি ঘরে বসেই একটি ভালো আয়ের ব্যবস্থা করতে পারেন। আজই শুরু করুন এবং নিজের ইনকাম যাত্রা গড়ুন হোয়াটসঅ্যাপ দিয়ে।